বন্যার পর পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি: কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

 বন্যার পর পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি: কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

সতর্কতা ও নিরাপত্তার উপায়


বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়

বন্যার সময় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়, কারণ বন্যার পানি সাধারণত দূষিত হয় এবং তা পানিবাহিত রোগের উৎস হতে পারে। এসময় নিরাপদ পানি পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো, যেগুলো অনুসরণ করে বন্যার সময় পানি পরিশোধিত করা যায়:

১. ফুটানো পানি

পানিকে বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর উপায় হলো ফুটানো। পানি কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট ধরে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। এর ফলে পানির মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস হয়। ফুটানো পানি ঠাণ্ডা করে তারপর পান করা উচিত।

২. ক্লোরিন বা ব্লিচ ব্যবহার

ক্লোরিন বা ব্লিচ একটি সহজলভ্য এবং কার্যকর পদ্ধতি যা পানি থেকে জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে। ১ লিটার পানিতে ২-৩ ফোঁটা ব্লিচ মিশিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর এই পানি পান করা যাবে। তবে ব্লিচ ব্যবহারে নির্দিষ্ট পরিমাণ মেনে চলা জরুরি।

৩. পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট

বন্যার সময় পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ট্যাবলেট পাওয়া যায়, যা সহজেই বহনযোগ্য এবং ব্যবহার উপযোগী। একটি ট্যাবলেট সাধারণত ১ লিটার পানির জন্য উপযুক্ত। ট্যাবলেট পানিতে মিশিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এই ট্যাবলেটগুলো পানি থেকে জীবাণু দূর করে, যা পানিকে নিরাপদ করে তোলে।

৪. স্যান্ড ফিল্টার ব্যবহার

স্যান্ড ফিল্টার পানি পরিশোধনের একটি প্রাচীন পদ্ধতি, যা আজও কার্যকর। এতে ধীরে ধীরে পানি ফিল্টার করা হয়, যেখানে বালি, কাঁকর ও কাঠকয়লার স্তর থাকে। এই পদ্ধতিতে পানি থেকে বড় ময়লা, কণা এবং কিছু জীবাণু অপসারিত হয়।

৫. কাপড় দিয়ে ছাঁকা

যদি অন্য কোনো উপায় না থাকে, তবে একাধিক স্তরের পরিষ্কার কাপড় দিয়ে পানি ছেঁকে নেওয়া যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে পানির মধ্যে থাকা বড় ময়লা এবং কিছু পরিমাণ জীবাণু দূর করা যায়। তবে এটি পূর্ণাঙ্গ পরিশোধন পদ্ধতি নয়, তাই পরবর্তীতে পানি ফুটিয়ে নেওয়া আরও ভালো।

৬. UV ফিল্টার ব্যবহার

যারা প্রযুক্তিগত সুবিধা পেতে পারেন, তারা UV ফিল্টার ব্যবহার করতে পারেন। এই ফিল্টার পানির মধ্যে থাকা জীবাণু ধ্বংস করতে অতিবেগুনি রশ্মি ব্যবহার করে, যা পানিকে নিরাপদ করে তোলে। এটি মূলত শহরাঞ্চলে বেশি ব্যবহৃত হয়।

সতর্কতা:

যে কোনো পদ্ধতি ব্যবহারের পর পানি সংরক্ষণের পাত্র পরিষ্কার এবং ঢাকনা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। দূষিত পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে এবং পানি সবসময় নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।

বন্যার সময় নিরাপদ পানি পাওয়া কঠিন হলেও, উপরে উল্লেখিত উপায়গুলো অনুসরণ করে পানি পরিশোধন করে সুস্থ থাকা সম্ভব।



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
https://blogger.googleusercontent.com/img/a/AVvXsEg9lWW0KhyBU3f2mMG2iOZWdhE0SZlk-Wy3n8BGbj9vU0A7YteljpSuhN6mgBC9-4X1oLJlojUITON6K7GnzyOdaNjVHfe3zAc5SCFi8QgdaBGhnv4zQVjFPkpRIXuiZ1ek0gohi4lhBP6VpnGtmKNwMwOX40ordDLHqmYbWB3DCwWiz9QSOsNnOfIsMMvm=s500